লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস - লাইলাতুল কদর সূরা - শবে কদর সম্পর্কে হাদিস
একদা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বনী ইসরাইলের জনৈক লোকেদের সম্পর্কে আলোচনায় উল্লেখ করেন তারা দীর্ঘ হায়াত লাভ করে অধিককাল যাবত ইবাদত করেছেন। এ কথা শুনে সাহাবারা খুব নিরাশ হয়ে পড়লেন। তারা বললেন, আমাদের বয়স পূর্বের উম্মতদেরর তুলনায় খুবই কম। আমরা কীভাবে তাদের মতো নেকআমল করে সওয়াব অর্জন করব। এ পরিপ্রেক্ষিতে মহান রাব্বল আলামিন 'সূরা আল কদর' অবতীর্ণ করেন। এখানে ক্লিক করুন
কদর শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা বা
মহাসম্মান। সূরা আল কদর পবিত্র কুরআন মাজীদের ৯৭ তম সূরা, এতে রয়েছে মহিমান্বিত ৫ টি আয়াত এবং এর রূকুর সংখ্যা ১।
এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিল।
পেজ সূচিপত্রঃ লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
- লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
- লাইলাতুল কদর সূরার বাংলা উচ্চারণ
- লাইলাতুল কদর সূরার বাংলা অর্থ
- লাইলাতুল কদর সূরার আরবি উচ্চারণ
- লাইলাতুল কদর সূরার ইংরেজি উচ্চারণ
- লাইলাতুল কদর সূরার তাফসীরে জাকারিয়া
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস | লাইলাতুল কদর সূরা
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস - উম্মতগণ চাইলে এ রাতকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেন। এ রাতের প্রত্যেকটি আমল আল্লাহর দরবারে গৃহিত হয়। কেবল কয়েক শ্রেণির মানুষ ছাড়া বাকী সবার দোয়া কবুল হয়। মাত্র একরাতের আমল দিয়ে নিজেকে জান্নাতি বানানোর সুযোগ করে দিয়েছে শবে কদর। শবে কদরে চার শ্রেণির মানুষকে ক্ষমা করা হবে না, তাদের কোনো কিছুই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না যতক্ষণ না তারা এসব অপকর্ম থেকে সংশোধন হবে।
এই চার শ্রেণির মানুষ হলো, এক- মদপানে অভ্যস্ত ব্যক্তি, দুই- মাতাপিতার অবাধ্য সন্তান, তিন- আত্মীয়তার
সম্পর্ক ছিন্নকারী, চার- হিংসা বিদ্বেষ
পোষণকারী ও সম্পর্কছিন্নকারী। (শুয়াবুল ঈমান,
৩য় খণ্ড, ৩৩৬ পৃষ্ঠা)।
শবে কদর এমন একটি মহিমান্বিত রাত যে রাত সম্পর্কে হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, হযরত জিব্রাইল (আ.) এরনেতৃত্বে ফেরেশতারা পৃথিবীতে চলে
আসেন। প্রত্যেকের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন,
যারা
দাঁড়িয়ে কিংবা বসে এবাদত করে থাকেন। (জিয়াউল কোরআন, ৫ম খণ্ড)।
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস - আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে আরও বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন, যদি আমি (ভাগ্যক্রমে) শবে কদর জেনে নিই, তাহলে তাতে কোন (দোয়া) পড়ব? তিনি বললেন, এই দোয়া, “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নী।” অর্থাৎ হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা ভালবাসো। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। [তিরমিযি ৩৫১৩, ইবন মাজাহ ৩৮৫০]
লাইলাতুল কদর সূরার বাংলা উচ্চারণ | লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
ইন্না আনযালনাহু ফী লাইলাতিল কাদরি,
ওয়ামা
আদরাকা মা লাইলাতুল কাদরি, লাইলাতুল কাদরি
খাইরুম মিন আলফি শাহর, তানাযযালুল মালাইকাতু
ওয়াররূহ, ফিহা বিইযনি রাব্বিহিম মিন
কুল্লি আমরিন, সালামুন হিয়া হাত্তা মাতলাইল
ফাজর।
লাইলাতুল কদর সূরার বাংলা অর্থ | লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে
তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা
শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের
অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে উষার
আবির্ভাব পর্যন্ত।
লাইলাতুল কদর সূরার আরবি উচ্চারণ | লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
سورة القدر:
إِنَّآ
أَنزَلۡنَـٰهُ فِى لَيۡلَةِ ٱلۡقَدۡرِ
وَمَآ
أَدۡرَٮٰكَ مَا لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ
لَيۡلَةُ
ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٌ۬ مِّنۡ أَلۡفِ شَہۡرٍ۬
تَنَزَّلُ
ٱلۡمَلَـٰٓٮِٕكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيہَا بِإِذۡنِ رَبِّہِم مِّن كُلِّ أَمۡرٍ۬
سَلَـٰمٌ هِىَ
حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ
লাইলাতুল কদর সূরার ইংরেজি উচ্চারণ | লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
Sūrat al-Qadr:
We have indeed revealed
this (Message) in the Night of Power: (1)
And what will explain to
thee what the Night of Power is? (2)
The Night of Power is
better than a thousand Months. (3)
The angels and the
Spirit descend therein, by the permission of their Lord, with all decrees. (4)
It's all Peace!... until
the rise of dawn (Morning Sun)! (5)
১. নিশ্চয় আমরা কুরআন নাযিল করেছি(১) লাইলাতুল কদরে(২);
(১) এখানে বলা হয়েছে, আমি কদরের রাতে কুরআন
নাযিল করেছি। আবার অন্যত্র বলা হয়েছে,
“রমযান
মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে।” [সূরা আল-বাকারাহ:
১৮৫] এ থেকে জানা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে হেরা গুহায় যে রাতে আল্লাহর ফেরেশতা অহী নিয়ে
এসেছিলেন সেটি ছিল রামাদান মাসের একটি রাত। এই রাতকে এখানে কদরের রাত বলা হয়েছে।
সূরা দোখানে এটাকে মুবারক রাত বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, “অবশ্যি আমরা একে একটি বরকতপূর্ণ রাতে নাযিল করেছি।” [সূরা আদ-দুখান: ৩]
এ আয়াত থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে,
কুরআন
পাক লাইলাতুল-কদরে অবতীর্ণ হয়েছে। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস - এর এক অর্থ এই যে, সমগ্র কুরআন লওহে মাহফুয থেকে লাইলাতুল-কদরে অবতীর্ণ করা
হয়েছে, অতঃপর জিবরীল একে ধীরে ধীরে
তেইশ বছর ধরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে পৌছাতে থাকেন।
দ্বিতীয় অর্থ এই যে, এ রাতে কয়েকটি আয়াত
অবতরণের মাধ্যমে কুরআন অবতরণের ধারাবাহিকতা সূচনা হয়ে যায়। এরপর অবশিষ্ট কুরআন
পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে পূর্ণ তেইশ বছরে নাযিল করা হয়। [আদওয়াউল বায়ান]
(২) কুরআন মাজীদের সুস্পষ্ট বর্ণনা দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, লাইলাতুল-কদর রামাদান মাসে। কিন্তু সঠিক তারিখ সম্পর্কে আলেমগণের বিভিন্ন উক্তি রয়েছে যা সংখ্যায় চল্লিশ পর্যন্ত পৌছে। এ-সব উক্তির নির্ভুল তথ্য এই যে, লাইলাতুল-কদর রামাদান মাসের শেষ দশ দিনের মধ্যে আসে; কিন্তু এরও কোন তারিখ নির্দিষ্ট নেই; বরং যে কোন রাত্রিতে হতে পারে। আবার প্রত্যেক রামাদানে তা পরিবর্তিতও হতে পারে। সহীহ হাদীসদৃষ্টি এই দশ দিনের বেজোড় রাত্রিগুলোতে লাইলাতুল-কদর হওয়ার সম্ভাবনা অধিক। এখানে ক্লিক করুন
লাইলাতুল কদর সূরার তাফসীরে জাকারিয়া | লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
১। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস - নিশ্চয়ই আমি এ (কুরআন)কে অবতীর্ণ করেছি
মর্যাদাপূর্ণ রাত্রিতে (শবেকদরে)। [1]
[1] অর্থাৎ, এই রাতে তা (কুরআন) অবতীর্ণ আরম্ভ করেছেন। অথবা তা ‘লাওহে মাহ্ফূয’ হতে দুনিয়ার আসমানে অবস্থিত ‘বাইতুল ইযযাহ’তে এক দফায় অবতীর্ণ করেছেন। আর সেখান থেকে প্রয়োজন মোতাবেক নবী (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং তা ২৩ বছরে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। জ্ঞাতব্য যে, ‘লাইলাতুল কদর’ রমযান মাসেই হয়ে থাকে; অন্য কোন মাসে নয়। এর প্রমাণ, মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘‘রমযান মাস; যাতে কুরআনকে অবতীর্ণ করা হয়েছে।’’ (সূরা বাক্বারাহ ১৮৫ নং আয়াত)
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন