আমরা আজ রমযান মাসের রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ খুব সুন্দর করে জানব। এবং সব রোজা ভঙ্গের কারণ গুলোর একে একে দলিল ভিত্তিক জানব। তো চলুন শুরু করা যাক,
সূচিপত্রঃ
- রোজা ভঙ্গের কারণ কী কী
- রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ
- রোজা ভঙ্গের কারণ রক্ত
- রোজা ভঙ্গের কারণ স্বপ্নদোষ
- যে সব কারনে রোজা ভাঙে না
রোজা ভঙ্গের কারণ কী কীঃ
রোজা ভঙ্গের কারণ কী কী - স্ত্রী সহবাস করা - পানাহার করা - এমন কিছু যা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত - ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা - হিলাদের হায়েয ও নিফাসের - কারণে রক্ত বের হওয়া - হস্তমৈথুন করা - শিঙ্গা লাগানো বা এমন জাতীয় কোন কাজ করার কারণে রক্ত বের করা
১। রোজা ভঙ্গের কারণ অবস্থায় ভুলে কিছু খেলে, পানি পান করলে বা স্ত্রীর সঙ্গম করলে রোজা ভাঙবে না।(সহিহ বুখারি: ১/২৫৯,আদদুররুল মুখতার ৩/৩৬৫)
২। রোজা অবস্থায় কন্ঠনালীর ভেতরে মশা,মাছি,ধুলো-বালি ইত্যাদি চলে গেলে তাহলে রোজা ভাঙবে না।কেননা এগুলো মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে না।যদিও মুখে তার স্বাদ অনুভব হয়।(ফাতাওয়ায়ে কাজিখান:১/২৯৮)
৩। রোজা অবস্থায় দিনের বেলায় সুরমা লাগানো,তেল লাগানো এবং সুগন্ধিযুক্ত জিনিস যেমন -আতর,ফুল,সেন্ট ইত্যাদির ঘ্রাণ নিলে রোজার কোন ক্ষতি হবে না। বরং যদি সুরমার রং থুথুর সঙ্গে মুখ দিয়ে বেরও হয় তবুও রোজা ভাঙবে না।(তিরমিজি :১/১৫৪,দুররুল মুখতার :৩/৩৬৬)
৪। রোজার মধ্যে দাঁত পরিষ্কার করার জন্য মাজন ব্যবহার করতে গিয়ে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।যদি দাঁত পরিষ্কার করার সময় কন্ঠনালী পর্যন্ত কিছু না পৌঁছে তাহলে কোনো অসুবিধা হবে না।তবে রোজা অবস্থায় মাজন বা টুথপেষ্ট ব্যবহার করা মাকরুহ ও অনুত্তম বিধায় তা পরিহার্য।(রদ্দুল মুহতার: ৩/৩৯৫)
৫। কুলি করার পর মুখের মধ্যে যে আদ্রতাভাব থাকে, তা গিলে ফেললে রোজা নষ্ট হবে না।তবে কুলি করার পরে দু'একবার থুথু ফেলে দিতে হবে। কেননা কুলি করার পর মুখের ভেতর কিছু পানি থেকে যায়।তাই দু'একবার থুথু ফেলার পরে যে আদ্রতা থাকে তা গিলে ফেললে রোজা ভাঙবে না। (আদদুূররুল মুখতার:৩/৩৬৭)
রোজা ভঙ্গের কারণসমূহঃ
রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ - স্ত্রী সহবাস করা - পানাহার করা - এমন কিছু যা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত - ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা - হিলাদের হায়েয ও নিফাসের - কারণে রক্ত বের হওয়া - হস্তমৈথুন করা - শিঙ্গা লাগানো বা এমন জাতীয় কোন কাজ করার কারণে রক্ত বের করা
১। অনিচ্ছাকৃত বমি হলে রোজা নষ্ট হয় না।(সহহি বুখারি:১/২৬০)
২। দিনের বেলা স্বপ্ন দোষ হলে রোজা ভাঙবে না।( তিরমিজি: ১/১৫২)
৩। রোজা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের হলে রোজা নষ্ট হয় না।তবে রক্ত বের করার দ্বারা শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হলে রক্ত বের করা মাকরুহ বলে বিবেচিত হবে। (আলবিনায়া: ৩/৬৪২,আহসানুল ফাতাওয়া: ৪/৪৩৫)
৪। ডাক্তারদের মতানু্যায়ী ইনজেকশন দ্বারা ঔষধ পেটে বা মস্তিষ্কে সরাসরি প্রবেশ করে না তাই যেকোন প্রকার ইনজেকশন দ্বারা রোজা ভাঙবে না। (বাদায়েউস সানায়ে:২/৯৩,ফাতহুল কাদির:২/২৫৭,ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া:২/৩৮)
৫। রোজা অবস্থায় রক্ত দান করলে রোজা ভাঙবে না।তবে খেয়াল রাখতে হবে শরীর দুর্বল না হয়।চোখে ড্রপ ব্যবহারের পর মুখে ঔষধের তিক্ততা অনুভূত হলেও রোজা ভাঙবে না। (রদ্দুল মুহতার: ২/১০৬,আহসানুল ফাতাওয়া:৪/৪৩৮)
রোজা ভঙ্গের কারণ রক্তঃ
রোজা ভঙ্গের কারণ রক্ত - রোজা ভঙ্গের কারণ হচ্ছে স্বাভাবিক প্রবেশ পথ দিয়ে শরীরে কোনো কিছু প্রবেশ করা। শরীর থেকে কোন কিছু বের হলে রোজা ভঙ্গ হয় না। তাই রক্ত দিলে রোজা ভঙ্গ হবে না। কেননা, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রেখে সিঙ্গা লাগিয়েছেন।
রোজা ভঙ্গের কারণ স্বপ্নদোষঃ
রোজা ভঙ্গের কারণ স্বপ্নদোষ - স্বপ্নদোষ মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই স্বপ্নদোষের কারণে রোজা ভঙ্গ হবে না। আমরা জানি আল্লাহ্ আমদের সকল কিছু জানে আর আমদের আমল দিয়ে আমরা কেউ জান্নাতে জেতে পারবনা আল্লাহর দয়া ছাড়া।
যে সব কারনে রোজা ভাঙে নাঃ
যে সব কারনে রোজা ভাঙে না - হিলাদের হায়েয ও নিফাসের - কারণে রক্ত বের হওয়া - হস্তমৈথুন করা - শিঙ্গা লাগানো বা এমন জাতীয় কোন কাজ করার কারণে রক্ত বের করা
১। অনিচ্ছাকৃত বমি করলে
২। ইন্সুলিন নিলে, বা ভিটামিন নয় এমন ইঞ্জেকশন নিলে
৩। ভুল করে রোজা অবস্থায় খেয়ে ফেললে রোজা ভাংবে না
৪। পানি দ্বারা ঠাণ্ডা গ্রহন, গোসল, সুগন্ধি ব্যবহার ও তার ঘ্রান নেয়া
৫। চোখ এ সুরমা লাগালে এবং কানে বা চোখে ঔষধের ফোটা গ্রহন করলে।
৬। কারো রোজা অবস্থায় স্বপ্ন দোষ হলে রোজা ভাংবে না। তবে গুসল করা ফরজ।
৭। শিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত বের করা বা কাউকে রক্ত দেয়া বা নিজের রক্ত পরীক্ষা করতে অল্প রক্ত বের করা
৮। তরকারি বা ইত্যাদির স্বাদ গ্রহন করলে,, ...যেমন ওযু করতে পানির স্বাদ নেয়া হয়, এতে ওযু ভাঙে না।
৯। ব্রাশ দিয়ে রোজা অবস্থায় দাত মাজলে .........মেসওয়াক করলে, তবে উত্তম ব্রাশে পেস্ট ব্যবহার করবে না।
১০। কোন ব্যাক্তি রোযার নিয়ত করার পর যদি দিনের কিছু অংশ .....সারা দিন বেহুশ হয়ে থাকে তবে রোজা সহি হবে
১১। স্ত্রিকে চুমা দেয়া বা তার সংস্পর্শে থাকা ..... তবে এতে যদি রোজা ভেঙ্গে যাওয়ার ভয় থাকে তবে তা থেকে বিরত থাকা।
১২। কেটে রক্ত বের হলে তবে যদি এতে কেউ অসুস্থ হয়ে যায় ....... দুর্বল হয়ে যায় তবে ভাংবে ও ১ টি রোজা কাজা করে নিবে।
উপরে সকল বিষয় আপনাদের উপকার কারার জন্য দেওয়া আছে যদি কিছু ভুল হয় তাহলে আমাকে কমেন্ট করে যানাতে পারেন কারণ মানুষ মাত্র ভুল হয়। আর যদি আমর ওয়েব সাইট টি ভালো লেগে থাকে তবে চাইলে পাশে থাকতে পারেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন