শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার সহজ উপায় An easy way to escape

আজ আমি আপনাদের সামনে সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করব, আশা করি আপনাদের সবার যানলে উপকার হবে। আমরা শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে যা কিছু  আল্লাহ্‌ তালা কোরআন- হাদিসে বলেছে তা আমরা জানবো ইনসাআল্লাহ্। এবং সকল বিষয় মাথাই রেখে আমল করার চেষ্টা করব ইনসাআল্লাহ্।

শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার সহজ উপায় An easy way to escape Satan's machinations



প্রশ্ন: ঈমান নষ্ট করার জন্য শয়তান কিভাবে ওয়াসওয়াসা (কুমন্ত্রণা) দেয়? এবং এতে সে কখন সফল হয় ও কখন ব্যর্থ? শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার উপায় কি?

উত্তর: 

শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার দোয়াঃ

বাংলা উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির। অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই, রাজত্ব একমাত্র তারই, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তারই জন্য, আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।

অভিশপ্ত শয়তান মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য  অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সদা-সর্বদা টিম ওয়ার্ক করে চলেছে। কেননা সে বনী আদমকে পথভ্রষ্ট করার অঙ্গীকার নিয়ে দুনিয়ার বুকে এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لأغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ إِلا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ

“সে (শয়তান) বলল, ‘আপনার ইজ্জতের কসম! আমি তাদের সবাইকে অবশ্যই পথভ্রষ্ট করব। তবে তাদের মধ্য থেকে আপনার একনিষ্ঠ বান্দাদেরকে ছাড়া’। [সোয়াদ: ৮২-৮৩]

আরও পড়ুনঃ খুব সহজে সকল ছোট-বড় পাপের গুনহা মাপের সঠিক পদ্ধতি

 তাই তো শয়তান তার চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়ন করার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে। যেমন:

▪ সে মানুষের হৃদয়ে ওয়াসওয়াসা বা কুমন্ত্রণা দেয়। অর্থাৎ তার অন্তরে খারাপ, অন্যায় ও অশ্লীল কাজের চেতনা বোধ ও চিন্তা জাগ্রত করে। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ

“যে জিন ও মানুষের মধ্যে থেকে মানুষের অন্তরসমূহে কুমন্ত্রণা দেয়।” [সূরা নাস: ৫-৬]

▪সে অতি সূক্ষ্মভাবে মানুষকে ছোট ছোট অন্যায় কাজ করানোর পর ক্রমান্বয়ে বড় পাপাচার ও অন্যায় কর্মের দিকে টেনে নিয়ে যায়।

▪কখনো ভয় দেখায়

▪কখনো প্রতারিত করে

▪কখনো অন্যায় কে সুশোভিত করে তুলে ধরে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الإنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا  

“এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্যে শত্রু করেছি শয়তান, মানব ও জিনকে। তারা ধোকা দেয়ার জন্যে একে অপরকে কারুকার্যখচিত কথাবার্তা শিক্ষা দেয়।” [সূরা আল-আনআম: ১১২]

আরও পড়ুনঃ অহংকার ও অহংকার রোগের প্রতিকার 

▪কখনও মনের মধ্যে সন্দেহের বীজ বপন করে দেয়। কখনো সালাতে, কখনো ওযুতে, কখনো পাক-পবিত্রতায়, আল্লাহর অস্তিত্বের ব্যাপারে, ইসলামের সত্যতার ব্যাপারে ইত্যাদি। এভাবে সে ধীরে ধীরে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে সরিয়ে তার পথে নিয়ে যায়। 

আর তাইতো আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, আমরা যেন কখনো শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ না করি। কারণ সে আমাদের স্পষ্ট দুশমন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ

“আর তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না, নিশ্চয় সে তোমাদের স্পষ্ট শত্রু। [বাকারা, ২/২০৮]

💠 শয়তান কখন তার চক্রান্ত বাস্তবায়নে সফল হয়?

শয়তান তখনই তার চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয় যখন মানুষ আল্লাহর কথা ভুলে গিয়ে তার অনুসরণ করা শুরু করে, এবাদত-বন্দেগি ছেড়ে দেয়, কোরআন তেলাওয়াত ও জিকির-আজকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, দ্বীনের জ্ঞানার্জন থেকে দূরে থাকে, পাপাচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং দুনিয়ার সুখ-সম্ভোগে মত্ত হয়ে মৃত্যু, কবর ও আখিরাতের কথা ভুলে যায়। 

💠 কিভাবে শয়তানের চক্রান্ত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ 

“আর যদি শয়তানের পক্ষ হতে কোন প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় চাও; নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।” [সূরা আরাফ: ২০০]

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,

رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ 

“হে আমার রব! শয়তানের প্ররোচনা হতে আমি আপনার কাছে পানাহ চাই। আর হে আমার রব! আমি আপনার কাছে পানাহ চাই, ওদের (শয়তানদের) উপস্থিতি হতে। [সূরা মু‘মিনুন: ৯৭-৯৮]

আরও পড়ুনঃ প্রকৃতির সৌন্দর্য আল্লাহর আশীর্বাদ 

সুতরাং যখনই মানুষ শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চায় অর্থাৎ “আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতান রাজীম” (আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি) পাঠ করে, মহান আল্লাহর দরবারের নিজের ভুল-ত্রুটি ও গুনাহের কথা তুলে ধরে খাঁটি অন্তরে তওবা করে, 

আল্লাহর ইবাদতের পথে ফিরে আসে, ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করে, কুরআন ও হাদিস পাঠ করে এবং জিকির-আজকারে পূর্ণ মনোযোগী হয় তখন শয়তানের সব কলাকৌশল ব্যর্থ হয় এবং সে লাঞ্ছিত অবস্থায় পলায়ন করে।

আল্লাহ আমাদেরকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

বিঃদ্রঃ

আল্লাহ্ আমদের তৈরি করেছেন তার ইবাদাতের জন্য কিন্তু আমরা তার ইবাদাত না করে আমরা বিভিন্ন আমল করতে ব্যাস্থ যে গুলা আল্লাহ্‌ এবং আল্লাহ্ রাসুল (সাঃ) কোন ভাবে সাপোর্ট করে না। আল্লাহ্ আমদের হেফাজত করুক সকলেই বলি “আল্লহুম্মা-আমিন”

সকলের জন্য দ্বীনি শিক্ষা ফরয় 

উপরে সকল বিষয় আপনাদের উপকার কারার জন্য দেওয়া আছে যদি কিছু ভুল হয় তাহলে আমাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন কারণ মানুষ মাত্র ভুল হয়। আর যদি আমর ওয়েব সাইট টি ভালো লেগে থাকে তবে চাইলে পাশে থাকতে পারেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন