পাইলস এর সমাধান। Solution of piles

এ পাঠেে যা থাকছে,
পাইলস কি ?
পাইলসের লক্ষণ ।
পাইলস এর সমাধান ।
কিভাবে আপনার পাইলস থেকে দূরে রাখবেন।
পাইলস অপারেশনের খরচ কত?
পাইলসের চিকিৎসা
আপনার পাইলস হয়ে গাছে নাতো, বুঝবেন যেভাবে।
আপনার পাইলস হলে  কী করবেন।
আপনার পাইলস থেকে  রক্ষা পওয়া  খুবই সহজ ।

পাইলস এর সমাধান

পাইলস কি 

পাইলস” নামটা আমরা সবাই শুনেছি। টিভি খুললেই অনেক সময় দেখতে পাওয়া যায় এ সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন গুলো। শুনতে বিরক্তও লাগে আমাদের। যাই হোক, ব্যাধিটি কিন্তু আসলেই মারাত্মক। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করতে না পারলে পাইলস খুবই মারাত্মক হতে পারে।

পাইলস একটি খুব সাধারণ ব্যাধি।এটি পুরুষ বা মহিলা যে কারো যে কোনও বয়সে হতে পারে। এই ব্যাধিটি মুলতমলদ্বারের শিরাগুলিতে ক্রমাগত উচ্চ চাপের কারণে ঘটে থাকে। অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে কোষ্ঠকাঠিন্য, মলত্যাগের সময় অত্যধিক চাপ এবং ক্রমাগত ডায়রিয়া।

সাধারণত বৃহদান্ত্রের শেষাংশে রেকটামের ভেতরে ও বাইরে থাকা কুশনের মতো একটি রক্তশিরার জালিকা থাকে। যা প্রয়োজন সাপেক্ষে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়।  এর নাম হেমোরয়েডস বা পাইলস। কিছু রোগী তাদের মলদ্বারে এই পাইলস অনুভব করতে পারে। এমনকি অনেকের মলদ্বার থেকে ঝুলেওপরে। অনেক সময়, পাইলস খুব বেদনাদায়ক হতে পারে এমনকি কোন কারণে রক্তপাতও হতে পারে। পাইলসের লক্ষণগুলি উপশম করার উপর নির্ভর করে অনেক ধরনের পাইলসের চিকিৎসা পাওয়া যায়।

গোসল করুন। আপনি বসে গোসলের মাধ্যমে আপনার পায়ু  অঞ্চলকে কয়েক ইঞ্চি উষ্ন জলে ভিজিয়ে রাখুন। 
  • পরিষ্কার টিস্যু দিয়ে মুছুন
  • দীর্ঘ সময় ধরে টয়লেটে চাপ দেওয়া বা বসে থাকা এড়িয়ে  চলুন। 
  • নির্দিষ্ট একটি মলম ব্যবহার করুন।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খান। 

পাইলস এর প্রকারভেদ

পাইলস দুটি ভাগে বিভক্ত- অভ্যন্তরীণ পাইলস এবং বাহ্যিক পাইলস। নাম অনুসারে, অভ্যন্তরীণ পাইলস মলদ্বারের রাস্তায় দেখা দেয়, তবে সেগুলি বেরিয়ে আসতে পারে এবং অনেক সময় মলদ্বারের বাইরেঝুলে যায়। এই ধরনের পাইলস মলদ্বার থেকে বেরিয়েআসার উপর ভিত্তি করে, কয়েকটি ভাগে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়
  • প্রথম ডিগ্রি- এই ধরনের পাইলস মলদ্বার থেকে বের হয় না তবে রক্তপাত হতে পারে
  • দ্বিতীয় ডিগ্রি - এই ধরনের পাইলস মলত্যাগের সময় বাইরে আসে কিন্তু পরে ভিতরে যায়
  • তৃতীয় ডিগ্রী- এই ধরনের পাইলস বাইরে আসে কিন্তু নিজে ঠিক করতে হয় 
  • চতুর্থ ডিগ্রি- এই ধরনের পাইলস গুলি মলদ্বারের আংশিক বাইরে থাকে এবং ভিতরে ঠেলে দেওয়া যায় না। পাইলসের ভিতরে রক্ত জমাট বাঁধলে এগুলি ফুলে যেতে পারে এবং প্রচুর ব্যথা হতে পারে
অন্যদিকে, বহিরাগত পাইলস মলদ্বারের নীচে মলদ্বারের কাছাকাছি ঘটে। ভিতরে রক্ত জমাট বাঁধলে তারাও বেদনাদায়ক হতে পারে।

পাইলসের লক্ষণ

পাইলসের লক্ষণ গুলি নিচে দেয়া হলোঃ
  • মলদ্বারের চারপাশে পিণ্ডের মত অনুভব করা
  • মলত্যাগের সময় রক্তপাত হওয়া
  • মলদ্বার থেকে মল বা পাতলা শ্লেষ্মা নিঃসরণ
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের অনুভূতি
  • মলদ্বারের চারপাশের ত্বকে ঘা বা চুলকানি অনুভূত হয়
  • বাহ্যিক পাইলসের ক্ষেত্রে, মলত্যাগের পরে অস্বস্তি এবং ব্যথা অনুভব হয়
  • পাইলস নির্ণয়
সাধারণতএকজন চিকিত্সক পরীক্ষা করেন এবং লক্ষণগুলি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। একটি গ্লাভড আঙুল সাধারণত মলদ্বারে ঢোকানো হয় যাতে মলদ্বারে পিণ্ডের উপস্থিতি অনুভব করা যায়। মাঝে মাঝে মলদ্বারের অভ্যন্তর দেখতে প্রোক্টোস্কোপ ব্যবহার করাহয়।

কিছু ক্ষেত্রে, রোগী অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন কিনা তা জানার জন্যচিকিত্সক একজন রোগীকে রক্ত পরীক্ষা করাতেও বলতে পারেন।

যদি ফলাফলগুলি ভিন্ন হয় যে লক্ষণগুলি অন্য কোনও অবস্থার কারণেও হতে পারে, তবে চিকিত্সক অন্যান্য পরীক্ষার সুপারিশ করবেন।

পাইলসের চিকিৎসা

অতীতে, ওপেন সার্জারিই একমাত্র বিকল্প ছিল। কিন্তু এখন, নানা রকমউন্নত পদ্ধতির আবির্ভাব ঘটেছে । হেমোরয়েডের জন্য নতুন পদ্ধতিকে বলা হয় 'মিনিমালি ইনভেসিভ প্রসিডিউর ফর হেমোরয়েডস' (MIPH), যাকে 'স্ট্যাপলার হেমোরয়েডেক্টমি'ও বলা হয়।

আবার লেজার সার্জারির মাধ্যমেও ধনন্তরী পাইলস চিকিৎসা হচ্ছে। বিষয়টি মোটেই সত্য নয়। কারণ, এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে লেজারের মাধ্যমে পাইলস চিকিৎসায় কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেই। রিং লাইগেশন এবং লংগো অপারেশনের মাধ্যমে প্রায় ১০০% রোগীর মলদ্বারে কোনো রূপ কাটাছেড়া ছাড়া চিকিৎসা করা সম্ভব।

প্রচলিত অপারেশনে মলদ্বারের তিনটি মাংশ পিন্ড কাটতে হয়। যা আজকাল আমরা শুধু তাদের জন্যই করি যারা রিং লাইগেশন এর জন্য উপযুক্ত নয় এবং লংগো অপারেশন এর যন্ত্র কিনতে অক্ষম।
লেজার দিয়ে পাইলস অপারেশন প্রচলিত অপারেশনের মতই। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে এক্ষেত্রে লেজার বিম দিয়ে কাটা হয় এবং প্রচলিত অপারেশনে সার্জিক্যাল নাইফ দিয়ে কাটা হয়। প্রচলিত অপারেশনের ন্যায় লেজার অপারেশনেও তিনটি ক্ষত স্থান হবে। লেজার অপারেশনের পর সাধারণত অপারেশনের মতই ব্যথা হয়, ঘা শুকাতে ১-২ মাস সময় লাগে। এবং প্রচলিত অপারেশনের মতই একই ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।

পাইলস অপারেশনের খরচ কত?

বাংলাদেশে সাধারণত ২ ভাবে পাইলস অপারেশন করা হয় যথা লংগু ও  ডায়াথারমি পদ্ধতি। এই দুটোর মধ্যে লংগু পদ্ধতি বেশ ব্যয়বহুল। এ পদ্ধতিতে ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। অন্যদিকে ডায়াথারমি পদ্ধতিতে দ্বারা  ১০-১২ হাজার টাকার মতো খরচ পড়ে। এ দুটো পদ্ধতি বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত । এ সকল আধুনিক পদ্ধতিতে রোগীকে এক দিনের বেশি হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন হয় না।যেসকল পরিবার এসব আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে সক্ষম নয় তারা পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা অবলম্বন করে ইঞ্জেকশনের সাহায্য চিকিৎসা নিয়ে থাকে।

পাইলস হলে যা যা খাওয়া নিষেধঃ

পাইলসে আক্রান্ত রোগীকে কিছু খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হয়। সব খাবার খাওয়া যাবে না বিশেষ করে মসলা জাতীয় খাবার। যেসব খাবার খেতে বিধিনিষেধ আছে সেগুলো নীচে আলোচনা করা হলো:- 
  • পাইলস এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের মসলাযুক্ত খাবার থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কারণ মসলাযুক্ত খাবার হজম শক্তিতে বাধা প্রদান করে ফলে পাইলসের ব্যথা বাড়ে। 
  • আপনার পাইলস হলে চা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। চা, কফি পাইলসের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী করে। 
  • বেকারি খাবার থেকেও দূরে থাকতে হবে। কারণ এগুলোতে ভেজালযুক্ত উপাদান পাওয়া যায় ফলে হজম শক্তি দূর্বল হয়ে যায়। ফাইবার না থাকার কারণে এ খাবার খাওয়ার মধ্য দিয়ে কোষ্টকাঠিন্য বাড়ে।

উপসংহারঃ

আল্লাহ আমদের সবাইকে ভালো থাকার তৌফিক দান করুন আমরা সবাই বলি আল্লহাহ হুম্মাহ আমিন।আর রোগ-বালা আল্লাহর দান  আল্লাহ্‌ আমাদের রোগ দিয়ে পরিক্ষা করছে আমরা রোগ এ পড়ে কাকে ডাকি সেটা দেখার জন্য।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন